বাংলাদেশের জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা (এনএসও) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এ আপনাকে স্বাগত
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়স্থ পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের একমাত্র জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা। এ সংস্থাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ দেশের জনসংখ্যা, কৃষি, শিল্প, অর্থনীতি, জনমিতি ও নানাবিধ আর্থসামাজিক বিষয়ে উপাত্ত সংগ্রহ, পরিসংখান প্রস্তুত, প্রকাশ ও অংশীজনের তথ্য-উপাত্তের চাহিদা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আধুনিক এ তথ্য প্রবাহের যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সংস্থাটি যুগোপযোগী ও সময়ানুগ পরিসংখ্যান প্রস্তুত ও সরবরাহের চিরায়ত রীতি-পদ্ধতির (হার্ডকপি প্রতিবেদন প্রকাশনা) পাশাপাশি সকল প্রতিবেদনের ভার্চুয়্যাল কপি (সফট কপি) ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও প্রকাশ করছে।
সরকারি ও বেসরকারি পরিকল্পনাবিদ, গবেষক, শিক্ষক, ছাত্র, উন্নয়নকর্মীসহ পরিসংখ্যান ব্যবহারকারী ও অনুরাগী সকলকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে স্বাগত জানাই।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যানের ব্যুরোর পরিচিতি
পরিসংখ্যান কোন একটি দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, উন্নয়ন, অগ্রগতি ও বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে। সে লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের পর বাংলাদেশের সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন ও অগ্রগতি পরিবীক্ষণে পরিসংখ্যানের সম্যক গুরুত্ব উপলদ্ধি করা হয়। ফলশ্রুতিতে, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদূরপ্রসারী চিন্তাধারা ও দিক-নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালের আগস্ট মাসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ৪টি পরিসংখ্যান অফিস (পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘পরিসংখ্যান ব্যুরো’, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘কৃষি পরিসংখ্যান ব্যুরো’ ও ‘কৃষি কমিশন’ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘আদম শুমারি কমিশন’)-কে একীভুত করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরিসংখ্যান প্রস্তুত ও প্রকাশের ক্ষেত্রে কোন সমন্বিত আইন, বিধি বা নীতিমালা না থাকায় কিছু আদেশ ও পরিপত্রের মাধ্যমে পূর্বে বিবিএস এর কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ‘পরিসংখ্যান আইন’ মহান জাতীয় সংসদে পাশ হওয়ার মধ্য দিয়ে বিবিএস সত্যিকার অর্থে একটি আইনগত ভিত্তি পেয়েছে। উক্ত আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী আইন পাশের পর একই বছর ৩ মার্চ তারিখে গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিবিএস এর প্রতিষ্ঠা ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে।
বিবিএস-এর ভিশন
জাতীয় পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ।
বিবিএস-এর মিশন
- সঠিক, মানসম্মত ও সময়োপযোগী পরিসংখ্যান সরবরাহ;
- নীতি নির্ধারক, পরিকল্পনাবিদ, গবেষক ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের চাহিদামাফিক উপাত্ত পরিবেশন;
- প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি;
- পেশাদারিত্ব প্রতিষ্ঠা।
বিবিএস এর কার্যাবলি
পরিসংখ্যান আইন, ২০১৩ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিবিএস এর কার্যাবলি নিম্নরূপ:
- সঠিক, নির্ভূল ও সময়োপযোগী এবং মানসম্মত পরিসংখ্যান প্রণয়ন ও সংরক্ষণ;
- সঠিক, নির্ভূল ও সময়োপযোগী পরিসংখ্যান প্রণয়নের জন্য দেশের আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে জরিপ পরিচালনা;
- জনশুমারি, কৃষি শুমারি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ শুমারি, অর্থনৈতিক শুমারিসহ অন্যান্য শুমারি ও জরিপের লক্ষ্যে যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ;
- সরকারি পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনাবিদ, নীতি-নির্ধারক, গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীগণের চাহিদা অনুসারে দ্রুততার সহিত নির্ভরযোগ্য ও ব্যবহারবান্ধব পরিসংখ্যান সরবরাহকরণ;
- পরিসংখ্যান বিষয়ক নীতিমালা ও পদ্ধতি প্রণয়ন;
- শাখা কার্যালয়ের কার্যাদি সরেজমিনে তদারক এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে এর প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ;
- জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র (National Strategy for the Development of Statistics) প্রবর্তন এবং সময় সময় হালনাগাদকরণ;
- পরিসংখ্যান বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ;
- পরিসংখ্যানের ভূমিকা ও কার্যক্রমের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ;
- পরিসংখ্যান কার্যক্রম সম্পাদনে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ;
- যে কোন কর্তৃপক্ষ, পরামর্শ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে পরিসংখ্যান বিষয়ে প্রয়োজনীয় সমন্বয় ও সহযোগিতা প্রদান;
- ভোক্তার মূল্য-সূচকসহ অন্যান্য মূল্যসূচক এবং জাতীয় হিসাব প্রস্তুকরণ;
- অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, সামাজিক ও জনমিতি সংক্রান্ত নির্দেশক প্রণয়ন ও প্রকাশকরণ;
- ভূমি ব্যবহারসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন, উৎপাদন-ব্যয় এবং ফসলাধীন জমির পরিমাণ প্রাক্কলন;
- জিও-কোড সিস্টেম প্রণয়ন এবং একমাত্র সরকারি জিও-কোড সিস্টেম হিসেবে উহা হালনাগাদকরণ ও সংরক্ষণ এবং অন্যান্য সকল সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহারের জন্য উদ্ধুদ্ধকরণ;
- জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (National Population Register) প্রণয়ন ও সময় সময় হালনাগাদকরণ;
- সমন্বিত সেন্ট্রাল জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম (Geographic Inforamtion System) প্রণয়ন;
- পরিসংখ্যানের প্রধান প্রধান কার্যক্রমসমূহ আন্তর্জাতিক মানে প্রমিতকরণ (Standardization);
- সংরক্ষণের বিকল্প ব্যবস্থাসহ জাতীয় তথ্য ভান্ডার প্রণয়ন ও আধুনিক পদ্ধতিতে আর্কাইভে সংরক্ষণ;
- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার জন্য প্রণীত সরকারি পরিসংখ্যানের মান সত্যকরণ (Authentication);
- পরিসংখ্যান সংক্রান্ত পরামর্শ সেবা প্রদান;
- সরকার কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন; এবং
- উপরিউক্ত দায়িত্ব পালন ও কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র (এনএসডিএস) প্রতিষ্ঠা
জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র (National Strategy for the Development of Statistics-NSDS) একটি বৈশ্বিক ধারণা (Global Concept) যার উৎপত্তি হয় ২০০৪ সালে মরক্কোর মারাকাস শহরে Marrakech Action Plan for Statistics (MAPS) ঘোষণার মাধ্যমে। তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ, উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রমে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে মূলত এ ধারণার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে, NSDS হলো দেশের পরিসংখ্যান ব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত একটি বিস্তারিত, বাস্তবসম্মত, অংশগ্রহণমূলক, পরিবর্তনশীল এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পরিকল্পনা দলিল। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের পরিসংখ্যান ব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নতিকল্পে জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র (National Strategy for the Development of Statistics: NSDS) প্রণয়ন করে যা ২৮ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়। দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রমাণক-নির্ভর পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে গুণগত উপাত্ত ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই পরিসংখ্যান প্রণয়ন আবশ্যক। এ লক্ষ্য-কে সামনে রেখে সঠিক, সময়োপযোগী ও নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান প্রণয়নের জন্য NSDS-এ ৬১টি কৌশলগত লক্ষ্যের আওতায় বিস্তারিত বাস্তবায়ন কার্যক্রম চিহ্নিত করে কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয়। বর্তমানে NSDS টেকসই পরিসংখ্যান প্রণয়নের একটি সমন্বিত বাস্তবায়ন কাঠামো (Implementation Framework) হিসেবে কাজ করছে। এ কৌশলপত্র প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থার একটি যুগোপযোগী দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে যার ওপর নির্ভর করে তথ্য-ভিত্তিক, সঠিক ও ফলপ্রসূ জাতীয় নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা সহজতর হচ্ছে। তাছাড়া, এর মাধ্যমে পরিসংখ্যান ব্যবস্থা/পদ্ধতির সার্বিক উন্নয়ন ও প্রমিতকরণ, অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ, উন্নয়ন নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা প্রদানের জন্য পরিসংখ্যানের গুণগতমান ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি; জাতীয় আয় (জিডিপি, মাথাপিছু আয় ইত্যাদি) নিরূপণ পদ্ধতি আধুনিকায়ন এবং তথ্যভাণ্ডার ও নেটওয়ার্কিং শক্তিশালী করার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাংগঠনিক কাঠামো
দেশের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থা (এনএসএস) এর কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। এ সংস্থার সার্বিক কার্যক্রম তদারকি ও প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানের লক্ষ্যে ২০১০ সালে পরিসংখ্যান বিভাগ পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ২০১২ সালে এ বিভাগের কলেবর বৃদ্ধি করে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামকরণ করা হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত হয় একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে। মহাপরিচালককে সহায়তা করার জন্য রয়েছেন উপমহাপরিচালক, পরিচালক, যুগ্ম-পরিচালক, উপ-পরিচালক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। বিবিএস এর বর্তমান অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী জনশক্তি হচ্ছে ৪৩৫২ জন এবং এর কার্যক্রম পরিচালিত হয় মূলত আটটি উইং এর মাধ্যমে, যার মধ্যে পাঁচটি হচ্ছে বিষয় ভিত্তিক (Subject matter) আর তিনটি সেবাভিত্তিক (Service)। বিষয়ভিত্তিক উইংসমূহ হচ্ছে : (১) সেন্সাস উইং (২) ইণ্ডাস্ট্রি এণ্ড লেবার উইং (৩) এগ্রিকালচার উইং (৪) ন্যাশনাল একাউন্টিং উইং (৫) ডেমোগ্রাফি এণ্ড হেলথ উইং এবং সেবা ভিত্তিক উইং সমূহ হচ্ছে: (১) কম্পিউটার উইং (২) এফএএন্ডএমআইএস উইং এবং (৩) স্ট্যাটিসটিক্যাল স্টাফ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এসএসটিআই)। প্রতিটি উইং এর নেতৃত্ব রয়েছেন একজন পরিচালক। এফএএন্ডএমআইএস উইং এর আওতায় মাঠ পর্যায়ে বিভাগীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়, জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় ও উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় পরিচালিত হয়। সদর দপ্তর ও বিভাগীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়সমূহের নির্দেশনা ও সুপারভিশনে জেলা ও উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়সমূহ উপাত্ত সংগ্রহ করে এবং সেই উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিষয়ভিত্তিক উইং ও প্রযোজ্যক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বরাবর প্রেরণ করে।
সেন্সাস উইং
সেন্সাস উইং দশকভিত্তিক তিনটি শুমারি যথাক্রমে জনশুমারি ও গৃহগণনা, কৃষি শুমারি ও অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালনার জন্য দায়বদ্ধ। বাংলাদেশে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৪ সালে প্রথম জনশুমারি ও গৃহগণনা, ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষি শুমারি এবং ১৯৮৬ সালে প্রথম অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ছয়টি আদম শুমারি ও গৃহগণনা শুমারি পরিচালিত হয় যার সর্বশেষটি হয় ২০২২ সালে; চার দফা কৃষি শুমারি পরিচালিত হয় যার সর্বশেষটি হয় ২০০৮ সালে এবং তিনটি অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালিত হয় যার প্রথমটি হয় ১৯৮৬ সালে এবং দ্বিতীয়টি হয় দুই ধাপে - শহর এলাকায় ২০০১ সালে ও গ্রামীণ এলাকায় ২০০৩ সালে। অর্থনৈতিক শুমারির তৃতীয়টি ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ থেকে ৩০ মে এর মধ্যে সফলভাবে পরিচালিত হয়েছে। সেন্সাস উইং আরো কিছু বড় পরিসরে অস্থায়ী জরিপ পরিচালনা করে থাকে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সাক্ষরতা নিরূপণ জরিপ (এলএএস), যা দক্ষতা যাচাইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায়োগিক সাক্ষরতার তথ্য সংকলন করে থাকে। বস্তিবাসী ও ভাসমান জনসংখ্যা সম্পর্কিত উপাত্তের অপর্যাপ্ততা পূরণের লক্ষ্যে উক্ত উইং কর্তৃক সম্প্রতি আরেকটি উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে, যা বস্তি শুমারি ও ভাসমান লোকগণনা নামে পরিচিত।
ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড লেবার উইং
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড লেবার উইং দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে বিদ্যমান শিল্পের ধরন ও কার্যাবলী বিশ্লেষণ, উৎপাদনশীলতা, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, কর্মসংস্থান এবং এ সংক্রান্ত সঠিক পরিসংখ্যান নিয়মিত প্রস্তুত ও প্রকাশ করে থাকে। ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড লেবার উইং এর কার্যক্রমকে সার্বিকভাবে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়- শিল্প পরিসংখ্যান ও শ্রম পরিসংখ্যান। শিল্প পরিসংখ্যানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অর্থনৈতিক শুমারি, বিজনেস রেজিস্টার (BR) প্রণয়ন ও হালনাগাদকরণ, উৎপাদন শিল্প প্রতিষ্ঠান জরিপ (SMI), পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা জরিপ, হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট জরিপ, কুটির শিল্প জরিপ, হস্ত ও কারুশিল্পজাত প্রতিষ্ঠান জরিপ প্রভৃতি। এছাড়া শ্রম পরিসংখ্যান সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম হলো শ্রমশক্তি জরিপ (LFS), জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ, ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ জরিপ, অভিবাসন ব্যয় জরিপ, Survey on Volunteerism in Bangladesh, Working Children in Dry Fish Industry Survey প্রভৃতি। অধিকুন্তু, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সমম্বয় করে এ উইং দেশের সকল অর্থনৈতিক কার্যক্রমের শিল্পজাত শ্রেণিবিভাগ, পেশাগত কার্যক্রমের পেশাভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ এবং পণ্য ও সেবার শ্রেণিবিভাগ করে থাকে।
এগ্রিকালচার উইং
এগ্রিকালচার উইং এর প্রধান কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের কৃষিখাত সংক্রান্ত উপাত্ত তৈরি ও প্রকাশ করা। এ উইংয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ছয়টি প্রধান ফসল - আউশ, আমন, বোরো, গম, পাট ও আলু এবং শাকসবজি, ফল, ফুলসহ ১৪০ টি অপ্রধান ফসলের চাষাধীন জমির পরিমাণ, উৎপাদন ও উৎপাদন হার সংক্রান্ত তথ্য প্রাক্কলন ও প্রকাশ করা। উক্ত উইং প্রধান শস্যসমূহের উৎপাদন সংক্রান্ত মৌসুমী পূর্বাভাসও প্রণয়ন করে থাকে। এ উইংয়ের অন্যান্য নিয়মিত কাজের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগে শস্যহানির প্রাক্কলন, লিঙ্গভেদে কৃষিশ্রমের মজুরি হার প্রাক্কলন, জমির ব্যবহার ও সেচ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান তৈরি এবং কৃষি পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ প্রকাশ করা। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) গাইড লাইন অনুসরণ করে কৃষি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রস্তুত ও প্রকাশ করা হয়।
ন্যাশনাল একাউন্টিং উইং
ন্যাশনাল একাউন্টিং উইং জাতীয় হিসাব সংক্রান্ত পরিসংখ্যান সংগ্রহ, সংকলন ও প্রকাশের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। বাংলাদেশের স্থুল দেশজ উৎপাদ (GDP), মাথাপিছু আয়, ভোগ, বিনিয়োগ ও সঞ্চয়সহ জাতীয় আয় সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক নির্দেশক প্রস্তুত ও প্রকাশ করে থাকে। এছাড়াও ন্যাশনাল একাউন্টিং উইং মূল্য ও মজুরি পরিসংখ্যান, শিল্প উৎপাদন ও উৎপাদকের মূল্য পরিসংখ্যান, বৈদেশিক বাণিজ্য পরিসংখ্যান, প্রকাশনা (বার্ষিক পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ পকেটবুক, মাসিক পরিসংখ্যান বুলেটিন) নিয়মিতভাবে প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। বিভিন্ন মূল্য সূচক যেমন ভোক্তা মূল্য সূচক, মজুরিহার সূচক, নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য সূচক, বাড়িভাড়া সূচক, উৎপাদকের মূল্য সূচক এবং শিল্প উৎপাদন সূচক সমূহের রিভিশন এবং রিভেজিং কার্যক্রম সম্পাদনা করাও এই উইং এর অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।
এফ এ এন্ড এম আই এস উইং
বিবিএস এর অধীনে ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে অভ্যন্তরীণ উইং পুনর্গঠনের মাধ্যমে এফএ এন্ড এমআইএস উইং সৃষ্টি করা হয়। এ উইং বিবিএস এর সকল প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। এ কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে সাধারণ প্রশাসন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, পদায়ন, পদোন্নতি, নিয়োগ, পরিসংখ্যান ভবন, মিউজিয়াম, যানবাহন, অফিস সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষন এবং মাঠপর্যায়ের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রন। এফএ এন্ড এমআইএস উইং এর অধীন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ প্রকাশনা শাখা রয়েছে। এর মাধ্যমে বিবিএস কর্তৃক পরিচালিত শুমারি ও জরিপ সমূহের প্রতিবেদন এবং এ সম্পর্কিত ডকুমেন্ট সমূহ মুদ্রণের কার্যক্রম সম্পাদিত হয়। এছাড়া এ উইং এর তত্ত্বাবধানে দুটি গ্রন্থাগার ও একটি কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডার এবং একটি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র (ডেকেয়ার) পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়।
ডেমোগ্রাফি এন্ড হেলথ উইং (Demography and Health Wing)
ডেমোগ্রাফি এন্ড হেলথ উইং দেশের স্বাস্থ্যসেবা, জনতত্ত্ব, পুষ্টি, আর্থ-সামাজিক ইত্যাদি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহপূর্বক পরিসংখ্যান প্রণয়ন করে থাকে। দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পর্যায়ক্রমিক দুটি আদমশুমারির মধ্যবর্তী সময়ে জনসংখ্যার হিসাব প্রাক্কলন, বার্ষিক ও ষান্মাসিক জনতত্ত্ব ও জনমিতি বিষয়ক পরিবর্তন সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রস্তুত ও প্রকাশ করে থাকে। এছাড়াও অত্র উইং এর মাধ্যমে জেন্ডার স্ট্যাটিস্টিক্স প্রণয়ন; গড় আয়ু প্রাক্কলন; জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, মাইগ্রেশন, জন্ম নিয়ন্ত্রণ, প্রতিবন্ধী, রোগ-ব্যাধি, দুর্ঘটনা, মা ও শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাল্য বিবাহ, চাইল্ড ডেভলপমেন্ট ও চাইল্ড ডিসিপ্লিন, স্যানিটেশন ব্যবস্থা ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ ও সংকলনপূর্বক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। অত্র উইং এর আওতায় পরিচালিত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমসমূহের মধ্যে রয়েছে - Multiple Indicator Cluster Survey (MICS), Health and Morbidity Status Survey (HMSS), Sample Vital Registration System (SVRS), Time Use Survey, Survey on Persons with Disabilities, Violence Against Women (VAW) Survey, National Hygiene Survey, Gender Statistics, Survey on Street Children, Survey on Children’s Education in Bangladesh ইত্যাদি।
কম্পিউটার উইং
কম্পিউটার উইং বিবিএস এর বিষয়ভিত্তিক উইং সমূহকে সব ধরনের তথ্য প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে থাকে। এ উইং বিভিন্ন শুমারি ও জরিপসমূহের তথ্য উপাত্ত ধারণ, প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। উইংয়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজসমূহ হচ্ছে বিবিএস কর্মকর্তা/কর্মচারীগণকে আইসিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান; সার্ভার-ভিত্তিক যন্ত্রপাতি ও কম্পিউটার ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা, সংস্থাপন করা, চালু করা; বিবিএস এর সকল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা। অত্র উইং বিবিএস ওয়েবসাইট ব্যবস্থাপনার কাজও করে থাকে এবং ব্যবহারকারীগণকে ইলেকট্রনিক উপাত্ত সরবরাহের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। বিভিন্ন শুমারি ও জরিপ পরিচালনার এ উইং বিবিএস এর ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে জিও কোড (Geo-code) ও ম্যাপ হালনাগাদ করে থাকে।
স্ট্যাটিসটিক্যাল স্টাফ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এসএসটিআই)
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাঠ ও সদর দপ্তরের সকল স্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে একটি প্রকল্পের অধীনে এসএসটিআই প্রতিষ্ঠা করা হয়। উক্ত প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু প্রশিক্ষণ কর্মসূচী পরিচালিত হয়। বিবিএস এর প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ডকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার লক্ষ্যে প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রকল্পের কর্মসূচী ২০০১ সালের রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তর করা হয়। এ উইং এখন বিবিএস এর প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিসংখ্যান, প্রশাসন, কম্পিউটার ও আইটি বিষয়ক, আর্থিক, বাজেট প্রণয়ন, প্রকল্প পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, চাকরি সংক্রান্ত আইন/বিধিমালা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। বিবিএস এর বিশেষায়িত প্রকৃতির কার্যক্রমে সম্পৃক্ত জনবলকে যুগোপযোগী ও মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ ও যোগ্য এবং পেশাদার মানব সম্পদে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে প্রতি অর্থবছরের জুলাই হতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হয়ে থাকে। এসএসটিআই হতে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি অনুযায়ী বিবিএস এর সকল শ্রেণির কর্মকর্তা/কর্মচারীদেরকে ন্যূনতম ৬০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের নিমিত্তে সারা বছরব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ বিবিএস এর নবনিযুক্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্যও নিয়মিত ভিত্তিতে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এছাড়া বিবিএস কর্তৃক একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ একাডেমি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে।
Personal Information Management System (PMS)
PIMS - Personal Information Management Systemড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ মাননীয় উপদেষ্টা, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় |
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ মাননীয় উপদেষ্টা, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় পিএসসিমাননীয় মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় |
মাননীয় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী |
মোঃ শহীদুজ্জামান সরকার, মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় |
Secretary |
Dr. Shahnaz Arefin, NDC Secretary, Statistics and Informatics Division |
Director General |
Mr. Mohammed Mizanur Rahman, Director General, Bangladesh Bureau of Statistics |
Disclaimer bcd
Every effort has been made to ensure that the uploaded information is updated, correct and accurate. The errors, if any, whenever brought to the notice will be corrected. But the Bangladesh Bureau of Statistics or the Government of Bangladesh will not be responsible or liable for any damages or losses to users that may result from any error in the information or data.